Saturday, April 25, 2009

বিশ্বকে ঠাণ্ডা করতে আসছে আইনস্টাইনের রেফ্রিজারেটর

আধুনিক রেফ্রিজারেটরকে হটিয়ে দিয়ে এগিয়ে এল ৩০ দশকের এক অন্যরকম রেফ্রিজারেটর। ১৯৩০ সালে আইনস্টাইনের নকশা দেখে এ রেফ্রিজারেটর তৈরির কাজে উঠেপড়ে লেগেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। যা চলবে বিদ্যুৎ ছাড়াই এবং আগাগোড়া পরিবেশবান্ধব।

আধুনিক রেফ্রিজারেটরে ব্যবহৃত হয় ফ্রেয়ন যা সিএফসি তৈরি করে বাড়িয়ে দিচ্ছে তাপ। তবে আইনস্টাইনের রেফ্রিজারেটরে ব্যবহৃত হবে অ্যামোনিয়া, বিউটেন ও পানি। কাজে লাগানো হবে কম তাপমাত্রায় ও চাপে বাষ্পীভবন পদ্ধতি। তাই আধুনিক রেফ্রিজারেটরের পরিবর্তে এটি ব্যবহৃত হলে গোবাল ওয়ার্মিংয়ের অন্যতম প্রভাবক সিএফসি’র উৎপাদন অনেকটাই কমে যাবে।

এ প্রক্রিয়ায় একটি ফ্লাক্সে হিমায়ক হিসেবে থাকবে বিউটেন। এরপর বাষ্পীভবন কুণ্ডলীতে ঢুকিয়ে দেয়া হবে অ্যামোনিয়া। এর মাধ্যমেই স্ফূটনাংক কমানো হবে বিউটেনের। ফলে বষ্পীভূত হয়ে বিউটেন ও অ্যামোনিয়ার মিশ্রণ ফ্লাক্সের তাপ শুষে পৌঁছে যাবে কনডেনসরে। এখানে বাষ্পমিশ্রণ থেকে পানিতে দ্রবীভূত হবে অ্যামোনিয়া এবং মুক্ত বিউটেন ভাসতে থাকবে। এসময় শোষণকৃত তাপ বিউটেন থেকে চলে যাবে অ্যামোনিয়ায় এবং তা থেকে পানিতে। তরল বিউটেন আবার বাষ্পীভবন কুণ্ডলীতে চলে যাবে এবং অ্যামোনিয়াকে একটি হিট এক্সচেঞ্জারের মাধ্যমে আবার তরল করে পাঠানো হবে বাষ্পীভবন কুণ্ডলীতে। এভাবেই চলতে থাকে পুরো শীতলীকরণ চক্র।

আধুনিক রেফ্রিজারেটরের চেয়ে আইনস্টাইনের রেফ্রিজারেটর তেমন কার্যকর না হওয়ায় পরবর্তীতে তা বাতিল হয়ে গিয়েছিল। তবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন তড়িৎ প্রকৌশলী বলছেন একটু অন্যভাবে তৈরি করলে এবং অন্য কোনো গ্যাস ব্যবহার করলে হয়তো এর দক্ষতা আরো বাড়বে।

এতে শুধু পাম্পটিকে উত্তপ্ত করার জন্য সামান্য শক্তির প্রয়োজন। যা আসতে পারে সূর্য থেকেই। এক মাসের মধ্যেই শেষ হবে আইনস্টাইনের ফ্রিজের আধুনিক সংস্করণের কাজ।

পরিবেশবান্ধব ফ্রিজ তৈরির আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে ‘কেমফ্রিজ’র গবেষকরা। সেখানে তারা ম্যাগনেটিক ফিল্ড বা চৌম্বক ক্ষেত্রকে কাজে লাগিয়ে অন্য আরেক ধরনের রেফ্রিজারেটর নিয়েও গবেষণা করছেন। গ্যাসের পরিবর্তে তাতে ব্যবহৃত হচ্ছে বিশেষ সংকর ধাতু এবং চৌম্বকক্ষেত্র। যখন সংকর ধাতুর পেছনে চৌম্বকক্ষেত্র রাখা হয় তখন এটি সাধারণ ফ্রিজের ‘গ্যাস সংকোচন (কমপ্রেসড গ্যাস)’-এর কাজ করে।

No comments: